দান সম্পর্কিত ৫টি ভুল ধারণা
আমার সম্পদ, আমার উপার্জনের মালিক আমি
সাধারণ ভ্রান্ত ধারণা হচ্ছে, আমার উপার্জন, আমার ধন-সম্পত্তির মালিক আমিই। জমিয়ে রাখা বা খরচ করা আমার ইচ্ছাধীন। এ থেকে কাউকে কিছু দেয়া না দেয়া আমার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। কিন্তু আল কোরআনের শিক্ষা এর সম্পূর্ণ বিপরীত। সূরা আদ্দাহরিয়াত (আয্যারিয়াত)-এর ১৯ আয়াতে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, নিশ্চয়ই তোমাদের সম্পদে নিঃস্ব ও অসহায়দের অধিকার রয়েছে। অর্থাৎ আমরা যা দান করি, কোরআনের দৃষ্টিতে তা দয়া নয়; তা অসহায়দের অধিকার বা হক্কুল ইবাদ। আপনি যখন দান করেন, তখন আপনি সৃষ্টির অধিকারকেই সম্মান করেন। তখন স্বাভাবিকভাবেই আল্লাহ আপনাকে সম্মানিত করবেন।
নবীজী (স) খুব স্পষ্ট করে বলেছেন, সৃষ্টির সেবায় যা ব্যয় করবে, তা-ই হচ্ছে তোমার সম্পদ, তোমার পরিত্রাণের উপায়। আর যা জমিয়ে রেখে যাবে, তা তোমার নয়; তোমার উত্তরাধিকারীর ভোগে ব্যবহৃত হবে। ঋগবেদে বলা হয়েছে, এসো প্রভুর সেবক হই। গরিব ও অভাবীদের দান করি। প্রকৃতপক্ষে হক্কুল ইবাদ বা মানবতার সেবাই স্রষ্টাকে পাওয়ার সহজ ও প্রশস্ত পথ।
আগে সচ্ছল হয়ে পরে দান করব
আগে সচ্ছল হয়ে পরে দান করব- এ দৃষ্টিভঙ্গি একেবারেই ভ্রান্ত। বরং বলা যায়, সচ্ছল হওয়ার জন্যেই দান করা প্রয়োজন। প্রাচুর্যের কোয়ান্টাম পঞ্চসূত্রের একটি হচ্ছে দান। কোয়ান্টাম সূত্র অনুসারে আপনি যখন দান করেন, তখন সেখানে শূন্যতা সৃষ্টি হয়। প্রাকৃতিক নিয়মেই সে শূন্যস্থান পূরণে চারপাশ থেকে প্রতিদান আসতে শুরু করে। যেভাবে বাতাসের শূন্যতা ঝড় সৃষ্টি করে, একইভাবে সৎ দান প্রতিদানের প্লাবন সৃষ্টি করে।
দানের ধর্মীয় নির্দেশ নিজ নিজ সামর্থ্যানুযায়ী ধনী-গরিব সবার জন্যেই প্রযোজ্য। আপনার যা আছে তা থেকেই দান করুন। দানের ক্ষেত্রে পরিমাণ নয়; আপনার আন্তরিকতাই প্রমাণ করবে আপনি বিশ্বাসী না অবিশ্বাসী। নবীজী (স) বলেন, যে ব্যক্তি তার বৈধ উপার্জন থেকে একটি খেজুর পরিমাণ দান করে, আল্লাহ ঐ দান নিজ হাতে গ্রহণ করেন এবং তাতে বরকত দিয়ে করে তোলেন পাহাড়তুল্য।
ভিক্ষুককে ভিক্ষা না দিলে পাপ হয়
ইসলামসহ অন্যান্য সকল ধর্মে দান এবং তার মাহাত্ম্যের যে কথা বলা হয়েছে, আমাদের সমাজে প্রচলিত ভিক্ষা-ব্যবসা কোনোভাবেই তার আওতায় পড়ে না। সাপ্তাহিক ২০০০, দৈনিক যায় যায় দিন ও দৈনিক ইত্তেফাকের অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ সংক্রান্ত কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য।
ভিক্ষুকদের ঘিরে ইতোমধ্যে গড়ে উঠেছে এক বিশাল নেটওয়ার্ক। এ নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করছে পেশাদার ভিক্ষুক-গডফাদাররা। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে তারাই পরিচালনা করছে রাজধানীর ভিক্ষাভিত্তিক ব্যবসাকে। ভিক্ষুক-গডফাদাররা সারাদেশ থেকে ভিক্ষুক সংগ্রহ করে তাদের ভিক্ষার নানা কৌশল শিখিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে রাজধানীর বিভিন্ন স্পটে। সাধারণভাবে ১০০ টাকায় ৫০ টাকা, কখনো কখনো ৪০/৪৫ টাকা পায় ভিক্ষুকরা, বাকিটা চলে যায় ভিক্ষুক-গডফাদারদের পকেটে।
ভিক্ষাবৃত্তিতে ঢাকা শহরে বছরে প্রায় ৩০ কোটি টাকা আয় করে সঙ্ঘবদ্ধ ভিক্ষুকের দল। এদের প্রতিদিনের আয় গড়ে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। মাসিক আয় ৯ হাজার টাকা এবং বছরে আয় ১ লাখ টাকার ওপর। (সাপ্তাহিক ২০০০, ১৮.০২.২০০৫)
ভিক্ষুক জমির আলীর জমি আছে ৩৫ বিঘা। ভিক্ষার টাকা জমিয়ে প্রতিবছর রংপুরে তার গ্রামের বাড়িতে এক বিঘা করে জমি কেনেন। ছেলেমেয়েদের জন্মদিনে পাঠান ঢাকার অভিজাত কনফেকশনারির কেক। ১২টি বেবিট্যাক্সি ও ২টি মাইক্রোবাসের মালিক ভিক্ষুক জালাল মোল্লার মাসিক আয় ৬০ হাজার টাকা। গ্রামের বাড়িতে তার দোতলা বিল্ডিংয়ের নাম দিয়েছেন মুসাফিরখানা। ভিক্ষুক করম আলী শেখের আছে সুদের ব্যবসা। শহরে ভিক্ষুক সেজে ভিক্ষা করলেও গ্রামে রয়েছে তার আলিশান বাড়ি, প্রাইভেট রিকশা। রিকশাওয়ালার বেতনই দেন মাসে আড়াই হাজার টাকা। (দৈনিক ইত্তেফাক, ১৩.০১.২০০৭)
এদেরকে ভিক্ষা দিয়ে আপনি যদি মনে করেন যে অনেক পুণ্য হাসিল করছেন তাহলে এর চেয়ে বোকামি আর কিছু হতে পারে না।
দান করে দানবীর হবো
যে দান লোক দেখানো, যা মানুষের প্রশংসা/বাহবা কুড়ানোর জন্যে দাতা পরিচয় বা হাসিলের উদ্দেশ্যে করা হয়, তা সৎ দান নয়। দান করে গ্রহীতাকে খোঁটা দেয়া, অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে শোষণ করা দানের বরকতকে নষ্ট করে। দানের বিনিময়ে গ্রহীতার কাছ থেকে যদি কোনো সুযোগ, আনুকূল্য, সমীহ বা বস্তুগত প্রাপ্তির প্রত্যাশা করা হয়, তবে তা যথার্থ দান নয়।
যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে দান করে ও তা গোপন রাখে এবং গ্রহীতাকে এজন্যে খোঁটা ও কষ্ট দেয় না তারা পুরস্কৃত হবে। তাদের কোনো ভয় ও দুঃখ-কষ্ট থাকবে না। (সূরা বাকারা ২৬৩)। নিঃশর্ত দানের জন্যে রয়েছে চমৎকার পুরস্কার। তারা লাভ করে আশীর্বাদধন্য দীর্ঘ জীবন ও অমরত্ব। (ঋগবেদ ১:১২৫)
নিজে দান করলেই হয়, অন্যকে বলার দরকার কী?
কাউকে দানে নিরুৎসাহিত করা গুরুতর অন্যায়। এ ধরনের কাজকে কোরআনে অবিশ্বাসীদের কাজ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। সূরা মাঊনে বলা হয়েছে, যারা বিশ্বাসী নয়, তারা মিসকিনদের খাবার দেয়ার ব্যাপারে লোকদেরকে উৎসাহিত করে না। এমনকি সূরা ফজরের ১৬ থেকে ২০ আয়াত ব্যাখ্যা করলে আমরা বুঝতে পারি, দারিদ্র্যের অন্যতম কারণ হচ্ছে অভাবগ্রস্তকে সাহায্য করতে অন্যদের উৎসাহিত না করা।
বুদ্ধবাণীতে বলা হয়েছে, কেউ যখন কাউকে দান করতে বাধা দেয় তখন সে তিনটি অন্যায় করে। প্রথমত, সে দাতাকে একটি ভালো কাজ থেকে বিরত করে। দ্বিতীয়ত, সে গ্রহীতাকে সাহায্য থেকে বঞ্চিত করে। তৃতীয়ত, নীচতার প্রকাশ ঘটিয়ে সে নিজের সত্তাকেই অপমানিত করে। (অংগুত্তর নিকয়া সূত্র নং ৫৭)
শাশ্বত ধর্মীয় শিক্ষার আলোকে আমরা নিঃসংশয়ে বলতে পারি, অন্যকে দানে উৎসাহিত করা বিশ্বাসী হওয়ারও গুরুত্বপূর্ণ শর্ত। তাই নিজে দানের পাশাপাশি অন্যকেও দানে উৎসাহিত করুন। সৎকাজে উৎসাহ দেয়ায় তার দানের কল্যাণের ভাগীদার আপনিও হবেন। আপনার জীবনেও কল্যাণের পরিমাণ বাড়তে থাকবে।
Please Contact with us for more details.
Call : +8801738775444
Call : +8801566058831
Whatsapp: wa.me/8801738775444
Our Services
WhatsApp :� wa.me/8801933307999
Skype : azadarch
Our Website : www.azadservice.com
Telegram for more information : https://t.me/Azadservice
Email US : azadarc@gmail.com
Youtube :� https://www.youtube.com/@DropshippingService?sub_confirmation=1
Virtual Assistant : www.azadservice.com/category/virtual-assistant/
Facebook Groups : https://www.facebook.com/groups/854505676275341/
Facebook Page : https://www.facebook.com/independentservice.today
Linkdin :� https://www.linkedin.com/in/azadservice/
Instagram : https://www.instagram.com/azadservicebd/
Pinterest : https://www.pinterest.com/azadservice/
Twitter.: https://twitter.com/azadservicebd
Tiktok : https://www.tiktok.com/@azadservices
0 Comments