গাজার একটি হাসপাতালে বিমান হামলায় অন্তত পাঁচশো মানুষ নিহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য দপ্তরের মুখপাত্র জানিয়েছেন। অন্যদিকে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র বলছেন এই ঘটনা কীভাবে হল তা তাদের জানা নেই, তারা খোঁজ নিচ্ছে।
বিবিসি সংবাদদাতারা এই খবরগুলি পৃথকভাবে নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন।
প্রাথমিক ভাবে যেটা জানা যাচ্ছে য গাজা ভূখন্ডের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ব্যাপটিস্ট হসপিটালে এই বিমান হামলা হয়েছে।
এর আগে জানা যায় যে গাজা ভূখন্ডের একটি বিদ্যালয়ের ওপরেও বিমান হামলা হয়। জাতিসংঘ বলেছে ওই হামলায় অন্তত ছয়জন মারা গেছেন যারা ওই স্কুলে আশ্রয় নিয়েছিলেন। ওই বিমান হামলায় আরও অনেকে আহত হয়েছেন বলে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে ইউএনআরডব্লিউএ
এক বিবৃতি জারি করে সংস্থাটি বলেছে “ভয়াবহ.. আর এটা প্রমাণ করছে যে বেসামরিক নাগরিকদের প্রাণের কোনও দামই নেই!”
ওই স্কুলটিতে প্রায় চার হাজার শরণার্থী আশ্রয় নিয়েছিলেন, যাদের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।
ঘটনাস্থলে বিবিসির সংবাদদাতা
বিবিসির সংবাদদাতা টম বেটম্যান আল আহলি আরব হাসপাতালে পৌঁছিয়েছেন।
তিনি জানাচ্ছেন, চার দিকে রক্তাক্ত, নিস্তব্ধ মানুষগুলো পড়ে আছেন। বিদ্যুৎ নেই, তাই অন্ধকারের মধ্যেই তাদের স্ট্রেচারে করে হাসপাতালে নিয়ে আসা হচ্ছে।
হাসপাতালের বাইরে শব পড়ে আছে, বিধ্বস্ত গাড়ি দেখতে পাচ্ছেন বিবিসি সংবাদদাতা।
কিছু ভিডিও বিবিসির কাছে এসেছে, যেগুলো যাচাই করে দেখা সম্ভব হয় নি। ওই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে একটা বিরাট বিস্ফোরণ হচ্ছে।
স্থানীয়রা বলছেন হাসপাতালের একটা বড় হলে আশ্রয় নিয়েছিলেন কয়েকশো মানুষ।
অসামরিক প্রতিরক্ষা কর্মীরা জানাচ্ছেন ইসরায়েলি বিমান হামলার কারণেই ওই বিস্ফোরণ ঘটে। কয়েকশো মানুষ ধ্বংস্তূপে আটকিয়ে পড়েছেন।
এক ডাক্তারের কথায়...
মধ্য গাজায় হামলার শিকার ওই হাসপাতালে কর্মরত এক চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছে বিবিসি যিনি নিজের নাম প্রকাশ করতে চান নি।
বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের নিউজআওয়ার অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, হামলাস্থলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, যেখানে প্রায় চার হাজার বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হাসপাতালের ৮০ শতাংশ কাজ বন্ধ হয়ে গেছে এবং বিস্ফোরণে শত শত মানুষ নিহত বা আহত হয়েছে।
বিবিসি হাসপাতালের আরেকজন কর্মী, ব্রিটিশ-ফিলিস্তিনি সার্জন অধ্যাপক ঘাসান আবু সিত্তাহর সঙ্গেও কথা বলেছে, যিনি হামলার সময় কাজ করছিলেন।
"হাসপাতালের কিছু অংশে আগুন লেগেছে, ছাদের কিছু অংশ পড়ে গেছে। সব খানে কাঁচের টুকরো ছড়িয়ে আছে,” বিবিসিকে বলেছেন মি. সিত্তাহ।
হামাস বলছে এটা যুদ্ধাপরাধ
গাজায় হামাস কর্তৃপক্ষের মিডিয়া দপ্তর বলছে গাজার হাসপাতালে হামলা যুদ্ধাপরাধের সামিল।
তারা বিবৃতি দিয়ে বলেছে “ওই হাসপাতালে কয়েকশো অসুস্থ ও আহত মানুষ ছিলেন, যারা, সম্ভবত, আগের বিমান হামলাগুলো কারণে ঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।“
বহু মানুষ এখনও ধ্বংস্তূপের নীচে আটকিয়ে আছেন, জানিয়েছে হামাস।
গাজার আল আহলি হাসপাতালে বিমান হামলায় নিহতদের উদ্দেশ্যে তিন দিনের শোক পালনের ঘোষণা দিয়েছেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।
0 Comments