কাদেরের দামি ঘড়ি কেন তোশাখানায় জমা হলো না: টিআইবি
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের দামি ঘড়ি সংগ্রহ কেন রাষ্ট্রীয় তোশাখানায় জমা হলো না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে টিআইবি। মন্ত্রীর ঘড়ি সংগ্রহ কী একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা, না কী ব্যাপকতর ও গভীরতর বিস্তৃতির লক্ষণ মাত্র তা দেশবাসীকে জানানোর আহ্বানও জানিয়েছে টিআইবি।
আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান এ কথা বলেন।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদকের দামি ঘড়ি সংগ্রহের বিষয়ে দেওয়া ব্যাখ্যাকে প্রশ্নবিদ্ধ ও অপর্যাপ্ত। তিনি বলেন, এসব সামগ্রী কেন যথানিয়মে ও যথাসময়ে রাষ্ট্রীয় তোশাখানায় জমা দেওয়া হলো না, তা দেশবাসীকে জানানো প্রয়োজন। একই সঙ্গে সংগৃহীত এ ধরনের উপহার কী ঘড়িতেই সীমাবদ্ধ, এরূপ সংগ্রহ কী শুধু সড়ক ও সেতু মন্ত্রীরই, না কী এর স্বরূপ ও বিস্তৃতি আরও ব্যাপক ও গভীর, তা খতিয়ে দেখে দেশবাসীকে জানাবার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ওবায়দুল কাদের তাঁর হাতে থাকা দামি ঘড়িগুলো উপহার হিসেবে পেয়েছেন বলে সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন। তিনি বলেছেন, দলের নেতা-কর্মীরা তাঁকে ভালোবেসে এগুলো দিয়েছেন।
টিআইবি বিবৃতিতে বলছে, যেভাবেই মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের উপহারসমূহ পেয়ে থাকুন না কেন ২০১২ সালের জুনে হালনাগাদকৃত তোশাখানা বিধি ১৯৭৪ অনুযায়ী উপহারসমূহ যথাসময়ে তোশাখানায় জমা দেওয়া হলো না কেন; জমা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত যেহেতু তিনি নিয়েছেন সেহেতু সংশ্লিষ্ট ধারা অনুসরণ করে উপহার প্রাপ্ত বস্তুর প্রকৃত মূল্য অনুযায়ী অর্থ রাষ্ট্রীয় কোশাগারে জমা দেওয়া হয়েছে কী না? এ ধরনের প্রশ্নের সুনির্দিষ্ট উত্তর জানার অধিকার জনগণের রয়েছে।
সরকারের অন্যতম প্রভাবশালী মন্ত্রী এবং ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক অবস্থানে থেকে তিনি কি অন্যদের স্থাপিত দৃষ্টান্ত অনুসরণ করলেন, না কী অন্যদের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করলেন? এরূপ প্রশ্ন উত্থাপিত হওয়া অমূলক না বলে মন্তব্য করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য মতে মন্ত্রী বলেছেন যে, ঠিকাদারেরা নির্বাচনের সময় “একটা এমাউন্ট” দিতে চেয়েছিল, যা তিনি গ্রহণ করেননি। তাঁর (মন্ত্রী কাদের) মতো গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থেকে সেসব ঠিকাদারদের এ ধরনের অনৈতিকতা ও দুর্নীতির চর্চা প্রতিরোধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? কাউকে কী তালিকাভুক্ত করা হয়েছে? না কী কমপক্ষে জনস্বার্থে তাদের তালিকা প্রকাশ করা হবে?
বিষয়গুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা এবং নিজের দলের নেতা কর্মীসহ কাউকে ছাড় দেওয়া হবে নাÑ এই অঙ্গীকারের সঙ্গে কী সামঞ্জস্যপূর্ণ বিবেচিত হবে? এসব প্রশ্নের জবাব দেওয়ার মতো সৎ সাহসের দৃষ্টান্ত সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা সৃষ্টিতে সহায়ক হবে বলে মনে করছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শতবর্ষ উদ্যাপন কার্যক্রমের শুরুর লগ্নে স্মরণ করা অযৌক্তিক হবে না, যে তোশাখানা বিধি জাতির পিতার নেতৃত্বাধীন সরকার কর্তৃক প্রণীত হয়েছিল, বর্তমান সরকারের আমলে হালনাগাদ হয়েছে, আর নভেম্বর ২০১৮ সালে তোশাখানা জাদুঘর উদ্বোধন করা হয়েছিল।
0 Comments